এস এম জুবাইদ, পেকুয়া:
সড়ক থাকলেও যানবাহন নিয়ে চলাচল করা তো দূরের কথা হেঁটে চলাও দূষকর। যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এমন একটি সড়কের দৃশ্য চোখে
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের শের আলী মাস্টার পাড়া সড়ক।
সরেজমিনে গিয়ে ঘুরে দেখা যায়, সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এক সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চললেও এখন পুরোপুরি থমকে গেছে। জনগণের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হওয়া সত্ত্বেও এ সড়কটি বছরের পর বছর ধরে অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছে। ২০ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এ সড়কে।
প্রায় ২০ বছর আগে সড়কটিতে ইট বিছিয়ে উন্নয়ন কাজ করা হয়েছিল। এটি মূলত একটি বেড়িবাঁধ, যার উপর দিয়েই শের আলী মাস্টার পাড়া জামে মসজিদ থেকে শুরু করে ৬৪/২বি পোল্ডার ১৪ নম্বর স্লুইসগেট পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক বিস্তৃত।সড়কটি জুড়ে অসংখ্য গর্ত, অধিকাংশ জায়গায় ইট উঠে গেছে। শের আলী মাস্টার পাড়া জামে মসজিদ থেকে রাজাখালী সংযোগ বাঁশের সাঁকো পর্যন্ত কোনোমতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চললেও স্লুইসগেট পর্যন্ত রিকশা-ভ্যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অনেক জায়গায় পিচ্ছিল কাঁদায় মানুষ হেঁটে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে।
টইটং ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব এনামুল হক বলেন,
সড়কটি এখন চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী। দুই চাকার যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শের আলী মাস্টার পাড়া, মিতান্তঘোনা, গাজিপাড়া, সোনাইয়াকাটা, পন্ডিতপাড়া, বাঁশখালীর মৌলার পাড়া, হায়দারীঘোনা, সায়ের পাড়া ও সিকদার পাড়া গ্রামের শত শত মানুষ এই সড়কেই নির্ভরশীল। এটি শুধু একটি ইউনিয়নের নয়, বরং পেকুয়া ও বাঁশখালী উপজেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী গুরুত্বপূর্ণ সড়ক।
পেকুয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য আবদুল মাবুদ ও টইটং ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এহসান চৌধুরী বলেন, শের আলী মাস্টার পাড়া সড়কটি এক সময় তৎকালীন যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদের উদ্যোগে ইট বিছিয়ে উন্নয়ন করা হয়েছিল। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত
কোন সংস্কার হয়নি। মানুষ এখনো সেই ভাঙাচোরা ইটের ওপর ভর করে চলাচল করছে। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে রোগী, নারী ও বৃদ্ধ সবাই ভোগান্তিতে আছে। এই সড়ক ৫/৬ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা। এছাড়া, রাজাখালী বিইউআই ফাজিল মাদরাসা, ফৈজুন্নেছা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীর প্রতিদিনের যাতায়াতও এই সড়কের উপর নির্ভরশীল। এটি এখন দুর্ভোগের প্রতীক। আমরা জোরালো দাবী করছি সড়কটি যেন দ্রুত সময়ে সংস্কার করা হোক।
একজন স্থানীয় অটোরিকশা চালক বলেন, রাস্তার অবস্থার কারণে যাত্রী তুলতে পারিনা, আয়ও কমে গেছে। গাড়ি চালানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।
এই সড়ক দিয়েই রাজাখালী আরবশাহ বাজারে প্রতি মঙ্গলবার ও শুক্রবার টইটংয়ের বটতলি, জুমপাড়া, আলিগ্যাকাটা ও মাদরাসা পাড়ার মানুষ সাপ্তাহিক বাজার করতে যান।
দ্রুত এ সড়কটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার ও টেকসই উন্নয়নের জোর দাবী করছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ মাহামুদ জানান আমার দপ্তর থেকে সড়কটির উন্নয়ন করা যায় কিনা তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।