সোমবার , ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ-অনিয়ম
  2. অর্থ-বাণিজ্য
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আলোচিত
  5. কক্সবাজার
  6. খেলা
  7. জাতীয়
  8. জীবনযাপন
  9. ধর্ম
  10. নোটিশ-বিজ্ঞপ্তি
  11. বিশেষ সংবাদ
  12. বৃহত্তর চট্রগ্রাম
  13. মুক্তমত
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল

মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প: সম্ভাবনা ও সংকটের দ্বন্দ্বে কক্সবাজার

প্রতিবেদক
সোনার বাংলা নিউজ
এপ্রিল ২৮, ২০২৫ ৩:৪৫ অপরাহ্ণ

ভূমিকা

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার অন্তর্গত মাতারবাড়ি এখন দেশের অন্যতম বৃহৎ জ্বালানি প্রকল্পের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ‘মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প’ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে গৃহীত একটি বৃহৎ উদ্যোগ।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—এই প্রকল্প কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণ, বিশেষ করে যুবসমাজ ও পরিবেশের জন্য কতটা সুফল বয়ে আনবে এবং কতটা ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি করবে?

মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের মৌলিক তথ্য

  • প্রকল্পের উৎপাদন ক্ষমতা: ১২০০ মেগাওয়াট
  • প্রযুক্তি: সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা প্রযুক্তি
  • পরিচালনা: বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (BPDB)
  • অর্থায়ন: জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (JICA)
  • সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো: গভীর সমুদ্র বন্দর, রাস্তা নির্মাণ, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ইত্যাদি।

প্রকল্পের ইতিবাচক অবদান

১. বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি

মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শিল্পোন্নয়ন, পর্যটন, কৃষি ও সেবাখাতের জন্য নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত হবে।
কক্সবাজার অঞ্চলের পর্যটন শিল্পের জন্য এটি একটি বড় সহায়ক শক্তি হতে পারে।

২. অবকাঠামোগত উন্নয়ন

নতুন রাস্তা, গভীর সমুদ্রবন্দর, ট্রান্সমিশন লাইন তৈরি হচ্ছে।
এতে কক্সবাজার বাংলাদেশের একটি বাণিজ্যিক করিডর হিসেবে বিকশিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে, যার সরাসরি সুফল পাচ্ছে জনগণ।

৩. চাকরি ও ব্যবসায়িক সুযোগ

  • নির্মাণ, নিরাপত্তা, ব্যবস্থাপনা খাতে হাজার হাজার তরুণের কর্মসংস্থান হয়েছে।
  • ছোট ও মাঝারি ব্যবসা (হোটেল, পরিবহন, সরবরাহ, সেবা) বেড়ে গেছে।
  • ভবিষ্যতে, কারিগরি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্থানীয় যুবকদের জন্য স্থায়ী চাকরির সুযোগ থাকবে।

৪. টেকনিক্যাল দক্ষতা অর্জন

বিশ্বমানের বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় জনশক্তি আন্তর্জাতিক মানের টেকনিক্যাল প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা অর্জন করছে, যা ভবিষ্যতে তাদের দেশের ভেতর ও বাইরের চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে।

প্রকল্পের নেতিবাচক প্রভাব ও উদ্বেগ

১. পরিবেশ দূষণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি

  • কয়লা পোড়ানোর ফলে কার্বন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়, যা বাতাসের গুণমান নষ্ট করে।
  • পানি ও মাটির দূষণ হতে পারে কয়লার ছাই ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ভুলের কারণে।
  • শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, চর্মরোগসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

২. জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি

কক্সবাজার একটি জলবায়ু সংকটপ্রবণ এলাকা। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে কক্সবাজারের উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে, ফলে কৃষি, বসতি ও জীবনধারা হুমকির মুখে পড়বে।

৩. বাস্তুসংস্থান ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি

  • স্থানীয় সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য, যেমন মাছ, প্রবাল প্রাচীর ইত্যাদি, দূষণের কারণে হুমকিতে পড়তে পারে।
  • প্রকল্পের জন্য বনভূমি ও জলাভূমি নষ্ট হয়েছে, ফলে বাস্তুসংস্থান ব্যাহত হচ্ছে।

৪. জমি অধিগ্রহণ ও সামাজিক বিপর্যয়

  • হাজার হাজার মানুষ জমি হারিয়েছে। অনেক পরিবার এখনও সঠিকভাবে পুনর্বাসিত হয়নি।
  • সামাজিক অস্থিরতা, আর্থিক অনিশ্চয়তা ও মানসিক চাপ বেড়েছে।

৫. যুবসমাজের বিভক্ত ভবিষ্যৎ

  • একদিকে উন্নয়ন-প্রেরণায় চাকরি ও দক্ষতা অর্জনের সুযোগ রয়েছে,
  • অন্যদিকে প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট সংকট (বেকারত্ব, বৈষম্য, জমি হারানো) থেকে হতাশা ও সামাজিক অপরাধের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।

কী করা প্রয়োজন? (সুপারিশ)

১. উন্নত পরিবেশ সুরক্ষা প্রযুক্তি ব্যবহার করা:
আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে হবে।

২. সম্পূর্ণ পুনর্বাসন এবং ন্যায্য ক্ষতিপূরণ প্রদান:
ভূমিহীন ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পূর্ণ অধিকার দিয়ে পুনর্বাসিত করতে হবে।

৩. স্থানীয় যুবকদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন:
যাতে তারা প্রকল্পের সুবিধা কাজে লাগিয়ে নিজেদের উন্নয়ন ঘটাতে পারে।

৪. নিয়মিত পরিবেশ পর্যবেক্ষণ:
সরকারের স্বাধীন সংস্থা দিয়ে পরিবেশগত প্রভাব নিয়মিত মূল্যায়ন করতে হবে।

৫. সামাজিক সচেতনতা ও সংলাপ বৃদ্ধি:
স্থানীয় জনগণের উদ্বেগ শুনে প্রকল্পের নীতিমালায় পরিবর্তন আনা উচিত।

উপসংহার

মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প একদিকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে একটি নতুন যুগের সূচনা ঘটাতে যাচ্ছে, অন্যদিকে স্থানীয় পরিবেশ, সমাজ ও যুবসমাজের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে।
সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, টেকসই উন্নয়ন কৌশল, এবং স্থানীয় জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণের মাধ্যমে এ প্রকল্পকে একটি প্রকৃত ‘জনকল্যাণমুখী উন্নয়ন’ উদ্যোগে রূপান্তর করা সম্ভব।
নচেত, মাতারবাড়ি প্রকল্পের উন্নয়ন সাফল্যের আড়ালে কক্সবাজারের ভবিষ্যৎ সংকটে নিমজ্জিত হতে পারে।

লেখা:

শফিকুর রহমান


 

সর্বশেষ - বিশেষ সংবাদ

আপনার জন্য নির্বাচিত

বায়ুদূষণে ২০২১ সালে বাংলাদেশে ২ লাখ ৩৫ হাজার মৃত্যু-ইউনিসেফ

ঈদের তিন দিনও থাকবে মাঝারি তাপপ্রবাহ

ঈদের তিন দিনও থাকবে মাঝারি তাপপ্রবাহ

চতুর্থবারের মতো শ্রেষ্ঠ সার্জেন্ট নির্বাচিত হলেন রোবায়েত

জনগণের নির্বাচিত সরকার

জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ

পিএমখালীতে এলজিইডি’র আরসিসি ঢালাই কালভার্ট বিধ্বস্ত

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নাশকতা চালাতে পাহাড়ে আস্তানা গাড়েন আরসা সদস্যরা

প্রেমের জেরে শরীরে আগুন লাগিয়ে নারী চিকিৎসকের আত্মহত্যা

চিনির নিম্নমুখী বাজারে বিশ্বে কমেছে খাদ্যপণ্যের দাম

ফুঁসে উঠছে ফিলিস্তিনিরা, তেলআবিবে হামলা শুরু

সংবাদকর্মী ফরহাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা