বৃহস্পতিবার , ২ জানুয়ারি ২০২৫ | ২৪শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ-অনিয়ম
  2. অর্থ-বাণিজ্য
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আলোচিত
  5. কক্সবাজার
  6. খেলা
  7. জাতীয়
  8. জীবনযাপন
  9. ধর্ম
  10. নোটিশ-বিজ্ঞপ্তি
  11. বিশেষ সংবাদ
  12. বৃহত্তর চট্রগ্রাম
  13. মুক্তমত
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল

বরিশালকে উড়িয়ে রংপুরের তিনে তিন

প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক..
জানুয়ারি ২, ২০২৫ ৫:১০ অপরাহ্ণ

ক্রিকেটীয় শক্তিতে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে এগিয়ে থাকা দুই দলের লড়াই। দর্শক সমর্থনও প্রচুর এই দুই দলের। গ্যালারিত সেটির প্রতিফলনও পড়ল। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে সেই উত্তেজনার ছিটেফোটাও দেখা গেল না। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় লড়াই করার রানই করতে পারল না ফরচুন বরিশাল। গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ও এবারের ফেভারিট দলকে পাত্তা না দিয়ে রংপুর রাইডার্স পেল হ্যাটট্রিক জয়ের স্বাদ।

বিপিএলে বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ফরচুন বরিশালকে ৮ উইকেটে হারায় রংপুর রাইডার্স।

আগের ম্যাচে ১৯৮ রান তাড়ায় দারুণভাবে জিতে যাওয়া বরিশাল এবার গুটিয়ে যায় মাত্র ১২৪ রানেই। রংপুর নেই রান তাড়ায় জিতে যায় ৩০ বল বাকি রেখে।

উইকেট ব্যাটিং সহায়কই ছিল। বরিশালের তারকা ব্যাটসম্যানরা পারেননি নিজেদের মেলে ধরতে।

সেই তামিম আর এই নাহিদ

কামরুল ইসলাম রাব্বিকে পুল শটে চার, এক্সট্রা কাভার দিয়ে ছক্কা। শেখ মেহেদি হাসানকে টানা তিন বাউন্ডারি। প্রতিটি শটে ফিরে এসেছিল যেন সেই তরুণ বয়সের বুনো তামিম ইকবাল। সেই পুরোনো তামিমের জবাব হয়ে এলেন এই সময়ের তারকা নাহিদ রানা।

৫ ওভার শেষে তামিমের রান ছিল ৫ চার ও ১ ছক্কায় ১৪ বলে ২৮। ষষ্ঠ ওভারে নাহিদের গতির সামনে টানা তিন বলে রান পেলেন না অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। সমাধান মনে করলেন তিনি ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে শট খেলাকে। কিন্তু সমাধান নয়, সেটিই হলো শেষ। নাহিদের গতিতে বোল্ড বরিশাল অধিনায়ক।

প্রথম তিন ওভারে ২৫ রান তোলা বরিশাল পরের ওভারে হারায় নাজমুল হোসেন শান্তকে (১০ বলে ৯)। শেখ মেহেদি হাসানকে স্লগ করে বিদায় নেন তিনি। গত বিপিএলে বরিশালে খেলা পাকিস্তানি বাঁহাতি পেসার আকিফ জাভেদ আক্রমণে এসে প্রথম ওভারেই ধাক্কা দেন পুরোনো দলকে। তাওহিদ হৃদয় ফেরেন ৪ রান করে।

পাওয়ার প্লেতে ৪৭ রান তুললেও বরিশাল হারায় তিন উইকেট।

ছোট্ট জুটি

তিন উইকেট হারানো দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন মুশফিকুর রহিম ও কাইল মেয়ার্স। ১১ বলে ৩ রান থেকে মেয়ার্স টানা দুই বলে চার ও ছক্কা মারেন শেখ মেহেদিকে।

সম্ভাবনাময় জুটি থামে ৩১ রানে। খুশদিল শাহ ফিরিয়ে দেন মুশফিকুর রহিমকে (১৫)।

উইকেটের মিছিল

মুশফিকের বিদায়ের পর আর কোনো ভালো জুটি গড়তে পারেনি বরিশাল। ইফতিখার আহমেদের এক ওভারেই ফেরেন মেয়ার্স ও আগের ম্যাচের নায়ক ফাহিম আশরাফ। প্রথম বলে চার দিয়ে শুরু করা মাহমুদউল্লাহ সামলাতে পারেননি নাহিদের গতি।

খুশদিল দ্রুত বিদায় করে দেন শাহিন শাহ আফ্রিদি ও তানভির ইসলামকে। ৩২ রানের মধ্যে বরিশাল হারায় ৬ উইকেট।

পরে নাহিদের এক ওভারে দুটি চার ও একটি ছক্কায় রান একটু বাড়ান মোহাম্মদ নাবি। ফ্রি হিটে রান নেওয়ার চেষ্টায় তার রান আউটেই (১৯ বলে ২১) শেষ হয় বরিশালের ইনিংস।

 

খুশদিল আবার

আগের দুই ম্যাচে দারুণ বোলিংয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছিলেন খুশদিল শাহ। এবার নিজেকেও ছাড়িয়ে তিন উইকেট নিয়ে তিনি দলের সফলতম বোলার। তার মূল কাজ ব্যাটিং। অথচ এখন তিনি টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেরা উইকেট শিকারি!

শেষ ওভারে ১৬ রান দেওয়ায় নাহিদ রানার বোলিং বিশ্লেষণ একটু খারাপ হয়ে গেছে। তবে তার দুটি উইকেট ম্যাচের প্রেক্ষাপটে ছিল দারুণ গুরুত্বপূর্ণ।

 

ইমনের নাটকীয় অভিষেক

কিছুদিন আগে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ মাতিয়ে বাংলাদেশের শিরোপা জয়ে বড় অবদান রাখা ইকবাল হোসেন ইমনের বিপিএল অভিষেক হলো ঘটনাবহুল ওভার দিয়ে।

প্রথম বলটি ওয়াইড করেন তিনি। পরের বলেই পেয়ে যান উইকেটের স্বাদ। যুব দলে তার অধিনায়ক আজিজুল হাকিম বিপিএল অভিষেকে ক্যাচ তুলে দেন পয়েন্টে। ডানা মেলে চেনা উদযাপনে মেতে ওঠেন ইমন।

পরের বলটি তিনি করেন ‘নো।’ বাই থেকে আসে আরও চার রান। এক বল পর তিনি ফিরিয়ে দেন তৌফিক খান তুষারকে।

জোড়া উইকেট পাওয়া ওভারে পরে জোড়া চার হজম করেন তিনি। দুই উইকেটের পতন হলেও ওভার থেকে আসে ১৭ রান।

শেষ নয় সেখানেই। ওভারের পঞ্চম বলে ওয়াইড ডেলিভারি ডাইভ দিয়ে ধরার চেষ্টায় আঙুলে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন কিপার মুশফিকুর রহিম।

 

এক জুটিতেই ম্যাচ শেষ

দ্রুত দুই উইকেট তুলে নিয়ে লড়াইয়ের আশা করছিল বরিশাল। কিন্তু সেই আশা মাড়িয়ে রংপুরকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন অ্যালেক্স হেলস ও সাইফ হাসান। মজার ব্যাপার হলো, দুজনের ব্যাটিং ছিল নিজেদের সহজাত ঘরানার উল্টো! সাইফের মতো একটু রয়েসয়ে খেলতে থাকেন হেলস, সাইফ হয়ে ওঠেন হেলসের মতো আগ্রাসী।

ইমনের এক ওভারে দুটি চার একটি ছয় মারেন সাইফ। হেলসের চারে ওই ওভার থেকে রান আসে ২০। পরে হেলসকে ৩৫ রানে রেখে সাইফ পৌঁছে যান ফিফটিতে।

একই ভাবে খেলে ৫ ওভার আগেই শেষ করে দেন দুজন। আগের দুই ম্যাচে ব্যর্থ হেলস এবার একটু আত্মবিশ্বাস জোগাড় করে নেন ৪১ বলে ৪৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে। ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৬ বলে ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন সাইফ। টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটি তাকে এনে দেয় ম্যাচ-সেরা স্বীকৃতি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ফরচুন বরিশাল : ১৮.২ ওভারে ১২৪ (তামিম ২৮, শান্ত ৯, হৃদয় ৪, মেয়ার্স ১৩, মুশফিক ১৫, মাহমুদউল্লাহ ১০, ফাহিম ১, নাবি ২১*, আফ্রিদি ৮*, তানভির ৬, ইমন ০; কামরুল ২-০-১৫-০, শেখ মেহেদি ৩-০-৩৩-১, ইফতিখার ২-০-১০-২, আকিফ ৩.২-০-১৩-১, নাহিদ ৪-০-৩২-২, খুশদিল ৪-০-১৮-৩)।

রংপুর রাইডার্স: ১৫ ওভারে ১২৮/২ (হেলস ৪৯*, আজিজুল ০, তৌফিক ০, সাইফ হাসান ৬২*, আফ্রিদি ৩-০-৩১-০, ইমন ৩-০-৪১-২, তানভির ৪-০-৯-০, মেয়ার্স ১-০-১২-০, নাবি ২-০-১৬-০, ফাহিম ২-০-১৪-০)।

ফল: রংপুর রাইডার্স ৮ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: সাইফ হাসান।

সর্বশেষ - বিশেষ সংবাদ